নীলফামারী প্রতিনিধি (সুভাষ বিশ্বাস): নীলফামারী ছমির উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজে অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে সমন্বয় না থাকায়, ৯০০ ছাত্র-ছাত্রীর লেখা পড়া চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। অধ্যক্ষের কক্ষ টর্চার সেলে পরিনত, আতংকিত থাকতে হচ্ছে শিক্ষক ও অভিভাবককে দূর্নিতির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের কারণে স্টাফ প্যাটার্ন বহি:ভ‚ত ১১জন শিক্ষক এম.পি.ও সিটের তথ্য গোপন করে আতœসাৎ করছে সরকারের কোটি কোটি টাকা। জাল সনদ দিয়ে কর্মরত রয়েছে কম্পিউটার শিক্ষক। লাঞ্চিত হচ্ছেন স্কুল শিক্ষিকা ফলে নানা অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটছে স্কুল চত্ত¡রে। ১৯৬৩ সালে গরিব ও দরিদ্র ছাত্রদের লেখাপড়ার সুযোগ করে দিতে ছমির উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। শহরের জিরো পয়েন্টে থাকা এক মাত্র বে-সরকারি বিদ্যালয় হিসাবে চরম সু-খ্যাতি অর্জন করে। কিন্তু বিগত ১ যুগ ধরে সাবেক প্রধান শিক্ষক সুলতান স্যারের অনিয়ম-দূর্নীতি, অর্থ-আতœসাৎ ও শিক্ষক নিয়োগে দূর্নীতির আশ্রয়ের কারণে স্কুলটি আজ সু-খ্যাতি হারাতে বসেছে। বিভিন্ন অভিযোগে তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে স্কুলটির “গ” শাখা অনুমোদিত হয় ২০০১ ইং সালে ও “খ” শাখা অনুমোদিত হয় ২০১০ইং সালে আবার এম.পি.ও সিটের তথ্য গোপন করে বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন ১১ জন শিক্ষক ১। আফসানা আফরোজ (সুমি), ২। তহমিনা আক্তার বানু, ৩। আফসানা আফরোজ (আঁখি), ৪। মিজানুর রহমান, ৫। সীমা পারভিন, ৬। ফাতিমা খাতুন, ৭। শাহানা খাতুন, ৮। খালেক সাদেক চৌধুরী, ৯। ফাতেমা বেগম এরা সকলে সমাজ বিজ্ঞান এম.পি.ও ভ‚ক্তি। কিন্তু বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন বিভিন্ন বিষয় দেখিয়ে। এছাড়া ১০। মোরর্শেদা বেগম, এম.পি.ও সিটে বাংলা তথ্য গোপন করে বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন সমাজ বিজ্ঞানে, ১১। সুরেশ চন্দ্র রায়, এম.পি.ও সিটে ইংরেজী কিন্তু তথ্য গোপন করে নিয়োগ প্রাপ্ত সমাজ বিজ্ঞানে। আবার কম্পিউটার শিক্ষক মিজানুর রহমান এস.এস.সি ২য়, এইচ.এস.সি ৩য়, ডিগ্রি ৩য় বিভাগ থেকেও প্রথমে নিয়োগ পান সমাজ বিজ্ঞানে পরবর্তীতে একই দিনে দূর্নীতির আশ্রয় নিয়ে নিয়োগ নেন কম্পিউটার শিক্ষক হিসাবে। এ বিষয়ে সুরেশ চন্দ্র রায় বলেন আমাদের যখন নিয়োগ হয় তখন এম.পি.ও ভ‚ক্ত হত তিনটি বিষয়ে ১। বিজ্ঞান, ২। সমাজ বিজ্ঞান ও ৩। বানিজ্যতে আমরা সেই সময়ে সমাজ বিজ্ঞানে অন্তর্ভ‚ক্ত হই। আমাদের এম.পি.ও পরবর্তীতে নীতিমালা পরিবর্তন হয়ে বিষয় ভিত্তিক এম.পি.ও অন্তর্ভ‚ক্ত হয়। এ কারণে ভ‚ল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। আর এম.পি.ও সিটে নাম ও বিষয় ২য় বার পরিবর্তন হয় না। ফলে আমরা ১১ জন টাকা আতœসাৎ করছি না পরিশ্রম করে রোজগার করি। কম্পিউটার শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের এ বিষয়গুলি নিয়ে একাধিক বার তদন্ত হয়েছে আপনারা তদন্ত রিপোর্ট দেখেন অপর দিকে স্কুলটিতে অধ্যক্ষ নয় প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছে স্থানীয় সুশিল সমাজ ও অভিভাবকবৃন্দ। অধ্যক্ষ মেজবাহুল হক এর স্বৈরাচারনীতি, গলা উচিয়ে আঙ্গুল তুলে শিক্ষকদের শাশানো, অভিভাবকদের সাথে অশোভনীয় আচরণ, শিক্ষিকা লাঞ্চিত সহ মানষিক টর্চার সেলে পরিনত করছেন তার কক্ষটি। ফলে অধ্যক্ষের কক্ষে যেতে ভয়-পান শিক্ষিক ও অভিভাবকরা। কোন শিক্ষককে তার কক্ষে ডাকলে শিক্ষকরা রীতি মতো আতংকিত হয়ে পরে। বিভিন্ন অভিযোগে জানা গেছে স্কুল ছুটির পর প্রায় প্রতিদিন অধ্যক্ষের নোটিশের মাধ্যমে স্কুলের মান উন্নয়ের জন্য ২য় ঘন্টা করে মিটিং হত। এ সব মিটিংয়ে সকল শিক্ষককে উপস্থিত থাকতে হত। সারা দিন কর্মব্যস্ত থাকার পর যদি কোন শিক্ষিকা শারারিক বা পারিবারিক সমস্যার কারণে উপস্থিত না থাকত বা ছুটি চাইতো তাহলে অধ্যক্ষ মেজবাহুল হক আঙ্গুল তুলে অশোভন আচারণ করতেন। তিনি বলতেন আপনারা চাকুরী করতে আসছেন যদি রাত ১২ সময় ও আপনাদের ডাকতে হয় আপনার আসতে বাদ্ধ। শিক্ষিকা ফাতেমা বেগম ও তছলিমা নাসরিনকে উদেশ্য করে এভাবে তাদের মানষিক শ্লিলতা হানি করে অধ্যক্ষ মেজবাহুল হক। এছাড়া বিভিন্ন সময় শিক্ষকদের তার কক্ষে ডেকে এনে লেকচারের নামে হয়রানি মূলক আচারণ ও মানকি শ্লিলতা হানির ঘটনার ঘটছে প্রতিনিয়ত। এছাড়া মেজবাহুল হক বিভিন্ন ক্লাস রুমে ঢুকে ছাত্র-ছাত্রীদের সামনেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শিক্ষকদের লাঞ্চিত করেন। এখানেই শেষ নয় দরখাস্ত লেখাতে ভ‚ল থাকার কারনে দশম শ্রেনীর খ শাখার ছাত্রী তানজিলার মাকে দরখাস্ত ছুড়ে মুখে মেরেছে অধ্যক্ষ মেজবাহুল হক। শিক্ষক নিয়ম মাফিক বেতন ভাতা উত্তোলন বন্ধ হয়ে গেছে। হিন্দু শিক্ষকদের বেতন ভাতা ছাড়াই শারদীয়া দূর্গা পূজা করতে হয়েছে। এ বিষয়ে স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মেজবাহুল হক বলেন, ২০১০ সালের নীতিমালা অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক পদটি বিলুপ্ত হয়। আমি অধ্যক্ষ হিসাবে বৈধ আর নিয়োগ দূর্নীতি আমার সময়ে হয়নি। এসব বিষয়ে আমি জানি না। মেজবাহুল হক বলেন, আমি শিক্ষককে লাঞ্চিত করি নাই। তারা ক্লাস সময়ে মার্কেটে কেনাকাটা করতে যেত। আমি এটা বন্ধ করছি মাত্র। তারা আমাকে মানুষিক টর্চার করছে। তার দালিলিক প্রমান আমার কাছে আছে। মেজবাহুল হক নীলফামারী পলাশ বাড়ী কলেজে কর্মরত ছিলেন। সেখানে তিনি এম.পি.ও ভ‚ক্ত শিক্ষক ছিলেন। চাকুরী ছেড়ে কেনো এম.পি.ও ভ‚ক্তি কোন দিন হবে না জেনেও এখানে অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদান করলেন তা নিয়ে উঠেছে হাজারো প্রশ্ন। অভিভাবকরা মনে করছে স্বীয় স্বার্থ হাসিল করার জন্য এখানে যোগদান করেন। সুধী সমাজ মনে করছে ছমির উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজটিকে বাঁচাতে ও সুনাম অক্ষন্ন রাখতে হলে স্কুলটিকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে আলাদা করতে হবে। কলেজ অধ্যক্ষের অধীনে শুধু কলেজ থাকবে, তাহলে স্কুল এন্ড কলেজটির সু-দিন ফিরে আসবে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন অভিযোগগুলো দ্রæত খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply